।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঈদের দিন থেকে ব্রহ্মপুত্রে নদে বিনোদন প্রেমীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নৌ-ভ্রমণ সেই আনন্দকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। নদী বন্দর ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে তীরে চলছে আনন্দের ঢেউ। লাখো মানুষের পদচারণায় মুখোরিত চিলমারীর নদী বন্দর ও ব্রহ্মপুত্রের ডানতীর। ঈদের আনন্দসহ এলাকার সৌর্ন্দয্য উপভোগ করতে চিলমারীসহ আশপাশের উপজেলার ও বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন বিনোদন প্রেমী হাজারো মানুষ ভিড় করছেন চিলমারী ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে। বিনোদন প্রেমীদের পদভারে মুখোরিত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। ঈদের দিন থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী ও শিশু-কিশোরসহ সব বয়সেরই বিনোদন প্রেমী দর্শনার্থীদের পদচারণায় ও মিলন মেলায় মুখোরিত হয়ে উঠেছে আশপাশের এলাকা।
এলাকার মানুষজন জানান, ঈদের দিন থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত কয়েক লক্ষ বিনোদন প্রেমীর ভিড়ে পুরো ডানতীর নদী বন্দর এলাকা মুখোরিত হয়ে উঠেছে। সেই সাথে নৌ-ভ্রমণ বাড়িয়ে দিয়েছে আনন্দ। ক্রমেই পরিচিতি লাভ করছে ব্রহ্মপুত্রের বিনোদন পার্ক হিসেবে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নদী বন্দর থেকে শুরু করে পুরো ব্রহ্মপুত্র নদ এলাকা বর্ষায় সর্বত্র এই নদ একাকার হয়ে যায়, পানিতে ছয়লাব হয়ে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে ব্রক্ষ্মপুত্র নদ অজস্র ধারা হয়ে অসংখ্য চর ও দ্বীপ তৈরি করে প্রবাহিত হয়। চর ও দ্বীপ গুলি কাশ ফুলে ছেয়ে যায় এবং দিগন্তে বিস্তৃতি লাভ করে। এই সমস্ত চরাঞ্চলগুলি ও ব্রক্ষ্মপুত্র নদ মিলে পর্যটকদের আকর্ষণ করে। বিভিন্ন এলাকার লোকেরা এই দৃশ্য দেখতে এবং নৌকা ভ্রমণ করতে এখানে আগমন করে থাকে। শীতে ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি এই এলাকাকে প্রাকৃতিক ভাবে অতুলনীয় করে তোলে। জেলেরা দলে দলে মৎস্য শিকারে ব্যস্ত থাকে, ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য তা বাড়তি আনন্দ দেয়।
চিলমারীকে একটি পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা হলে ভ্রমণ পিয়াসু অসংখ্য নর-নারী, কিশোর তরুণ-তরুণীরা চিত্ত বিনোদনের সুযোগ লাভ করবে। সকল স্তরের মানুষের মতে, ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীর এবং নদী বন্দর এলাকায় পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠার অপার সম্ভাবনা রয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পাবলিক টয়লেট, যাত্রী ছাউনি নির্মাণসহ বিভিন্ন বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। নিরাপত্তাজনিত কারণে দূর থেকে আসা লোকজন কিছুটা সমস্যা মনে করলেও হাজার হাজার দর্শনার্থীর আগমনে আশেপাশের এলাকায় উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
স্থানীয়রা বলেন, চিলমারী উপজেলা ব্রিটিশ আমল থেকে নানা কারণে গুরত্বপূর্ণ। সে সময় গড়ে ওঠে নদী বন্দর। মাড়োয়াড়ি ব্যবসায়ীরা এ নদী বন্দর হয়ে তাদের পণ্য আনা-নেয়া করতেন। এখানে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠলে আবারও প্রাণ ফিরে পাবে বন্দর এবং সরকারও এ এলাকা থেকে আয় করতে পারবে রাজস্য।
সাবেক এমপি গোলাম হাবিব বলেন, চিলমারী বন্দরের ঐতিহ্য বহু প্রাচীন। ব্রিটিশ ভারতে ব্রহ্মপুত্র নদ বেয়ে কলকাতা হতে পন্য ও যাত্রীবাহী জাহাজ সমূহ চিলমারী অতিক্রম করে অবিভক্ত আসামের নদী বন্দরে গিয়ে পৌঁছাত, চিলমারী বন্দর ছিল ঐ সমস্ত জাহাজের চেকিং বন্দর। বিখ্যাত পল্লী সংগীতের সম্রাট আব্বাছ উদ্দিন চিলমারীকে তার গানের মাধ্যমে পূর্ব ও পশ্চিম বঙ্গে চিলমারী নামটিকে পরিচিত করে গেছেন। নতুন করে এই এলাকাকে নদী বন্দর ঘোষণা করায় তা আরও পরিচিতি লাভ করেছে। তাই চিলমারীকে একটি উপর-চধৎশ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য পর্যটন বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আনন্দ উপভোগ করতে আসা বিদ্যুৎ, সখি, রানী, মামুনসহ কথা হয় অনেকের সাথে তারা আনন্দের সাথে বলেন, এখানে ঘুরতে আসলে মনে যেন আনন্দের ঢেউ উঠে। বিশাল এই নদীর মাঝে মাঝে ছোট ছোট চর আর কাশ বাগান প্রকৃতির একটি যেন সাজিয়ে রাখা সৌর্ন্দয্য বৃদ্ধি করে আরও সৌর্ন্দয্য করে তুলেছে। তবে এখানে নিরাপত্তার ব্যবস্থাসহ একটি পার্ক তৈরি হলে এই এলাকায় আরও সৌর্ন্দয্য বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে বিনোদন প্রেমীদের পদচারণা আরও বেড়ে যাবে বলে আশা করছি।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/এপ্রিল/১৩/২৪